নিস্তব্ধ সিলেট! ঘর থেকে বের হলেই শাস্তি

কদিন আগেও যেখানে মানুষের ভিড় লেগে থাকত। যানবাহন আর মানুষের চাপে হেঁটে চলাও যেখানে ছিল দুষ্কর। সেই চিরচেনা সিলেট নগরী কেমন যেন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। ফাঁকা হয়ে উঠেছে নগরীর রাস্তা-ঘাট। নেই মানুষের চলাচল।

বিশেষ প্রযোজনে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাদের মাঝেও বিরাজ করছে উদ্ধেগ-উৎকণ্ঠা। জরুরি কাজ সেরে কোনোমতে বাড়ি ফেরার তাড়া। নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে নগরীর শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যর দোকানপাটও সন্ধ্যা হতেই বন্ধ হয়ে যায়। এ চিত্র এখন পুরো সিলেট নগরীর।

এতসব শঙ্কার মাঝেও আশার কথা হলো সিলেটে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
বুধবার (২৫ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, সিলেটে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৫৮৭ জন। এ বিভাগে বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ৩০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হয়েছেন ১৩৬ জন। আর কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ২০৭ জন।

এদের মধ্যে সিলেট জেলায় ৩৩ জন, সুনামগঞ্জে ৫২ জন, মৌলভীবাজারে ২৫ জন এবং হবিগঞ্জ জেলায় ৯৭ জন কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন।কোয়ারেন্টাইনে থাকা অধিকাংশই প্রবাস ফেরত। বাকিরা তাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন

তিনি জানান, সিলেটে বিভাগে এখনও পর্যন্ত কারো দেহে করোনার উপস্থতি শনাক্ত হয়নি।

তিনি আরো বলেন, সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন সদর হাসপাতালের বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন দুজন। এর আগে সোমবার (২৩ মার্চ) তিনজনের করোনাভাইরাস টেস্ট নেগেটিভ আসায় তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে গত ২৩ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আইসোলেশনে মারা যাওয়া যুক্তরাজ্য ফেরত সেই নারীর (৬১) দেহে করোনা ধরা পড়েনি। ওই নারী গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল জানিয়েছেন ওই নারীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সাতহাল গ্রামের সোহরাব আলীর স্ত্রী।

এদিকে নগরীতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাতে কেউ চলাচল করতে পারবে না। দিনের বেলাও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। দুই জন একসাথে দেখলেই ব্যবস্থা নেবে সেনাবাহিনী।

তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টা সেনাবাহিনী মাঠে মোতায়েন থাকবে। যখন যেখানে যা প্রয়োজন হবে, তাই নামানো হবে। একইভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টিমও যখন যা প্রয়োজন নামানো হবে।